আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক জয় ।। ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ 🏏
চলতি একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপে চলছে আফগানিস্তানের চমক। একদিনের ক্রিকেট ইতিহাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম বার জয়ের দেখা পেল আফগানিস্তান সেটাও আবার বিশ্বকাপের মত আসরে। একদিনের ক্রিকেটে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান মুখোকুখি হয়েছিলো সাত বার, তারমধ্যে সাত বারই জিতেছে পাকিস্তান। তবে এবার বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে লাস্ট বারের দেখায় চমক দেখালো আফগানিস্তান। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ থেকে শুরু হয় আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ যাত্রা। আর এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে আফগানরা জয় পেয়েছিলো দুই ম্যাচে, পাকিস্তানকে হারিয়ে হলো তিন। ২০২৩ বিশ্বকাপেই এখন পর্যন্ত তাদের জয় দুই ম্যাচে। গতবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল ইংল্যান্ডকে হারিয়েই নিজেদের প্রথম জয় তুলে নেয় আফগানরা। আর দ্বিতীয় জয়ও তুলে নিলো ওডিআই ক্রিকেট রঙ্কিংয়ে থাকা দ্বিতীয় শক্তিশালী দল পাকিস্তান।
এইবার ভারত বিশ্বকাপে চলছে ছোট দলের কাছে বড় দলের হারের চমক। প্রথমে আফগানিস্তানের কাছে হেরে গেল ইংল্যান্ড তারপর নেদারল্যান্ডের কাছে হারলো দক্ষিণ আফ্রিকা। এখন আবার আফগানিস্তানের কাছে হারলো পাকিস্তান। ম্যাচের আগে কেউ কল্পনাও করেনি আফগানিস্তানের কাছে হারবে পাকিস্তান। কারন আগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ও বর্তমান দলের অবস্থার কথা বিবেচনা করেও পাকিস্তান দল অনেকটাই এগিয়ে ছিল আফগানদের থেকে। সকল পরিসংখ্যান ও সমীকরণকে উপেক্ষা করে বিশাল ব্যবধানে জয় লাভ করে আফগানিস্তান। পাকিস্তানের দেওয়া ২৮৩ রানের টার্গেট তারা ৮ উইকেটে জয় লাভ করেছে। এইটা সত্যি আফগানিস্তানের জন্য বড় একটা জয়।
শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। তাদের চিন্তা ছিলো আগে ব্যাট করে ভালো একটা রানের টার্গেট দিয়ে আফগানিস্তানকে তাদের বোলিং দিয়ে আটকে দিবে। কিন্তু আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানদের কাছে ব্যর্থ পাকিস্তানি বোলাররা।
পাকিস্তান দলের মূল একাদশে খেলেছেন আবদুল্লাহ শফিক, ইমাম-উল হক, বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সৌদ শাকিল, ইফতিখার আহমেদ, শাদাব খান, উসামা মীর, শাহীন আফ্রিদি, হাসান আলী, হারিস রউফ।আর আফগানিস্তান দলের মূল একাদশে খেলেছেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, হাশমতুল্লাহ শাহিদি, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, ইকরাম আলীখিল, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, নবীন-উল হক, নূর আহমদ।
শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম উল হক মিলে ৫৬ রানের পার্টনরশিপ করে আউট হন ইমাম উল হক। ৭৫ বলে ৫৮ রান করেন আবদুল্লাহ শফিক। ৯২ বলে ৭৪ রান করে আউট হন বাবর আজম। ৪২ ওভার পর রানের গতি বাড়িয়ে দেন ইফতেখার আহমেদ ও সাদাব খান। ২৭ বলে ৪০ রান করেন ইফতেখার আহমেদ ও ৩৮ বলে ৪০ রান করেন সাদাব খান। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের রানের সংগ্রহ গিয়ে দাড়ায় ২৮২ তে।
২৮৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ভালো অবস্থানে আফগানিস্তান। ওপেনিংয়ে রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান মিলে ১৩০ রানের পার্টনরশিপ করে আউট হন গুরবাজ। ৫৩ বলে ৬৫ করে আউট হন তিনি। এরপর ১১৩ বলে ৮৭ রান করে আউট হন ইব্রাহিম জাদরান। এরপর রহমত শাহ ও হাশমতুল্লাহ শহীদী দুইজন মিলেই জয়ী হয়ে মাঠ ছাড়েন। ৮৪ বলে ৭৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন রহমত শাহ আর ৪৫ বলে ৪৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন হাশমতুল্লাহ শহীদী। ১ ওভার হাতে থাকতেই পাকিস্তানের দেওয়া টার্গেট উপেক্ষা করে জয় ছিনিয়ে নেয় আফগানিস্তান।