ভারত বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের জয়যাত্রা!

avatar

1000005911.jpg

ভারত বিশ্বকাপটা স্বপ্নের মত কাটছে আফগানিস্তান দলের। সকল ধরনের হিসাব-নিকাশ ছাপিয়ে আফগানিস্তান নিজেদের প্রমান করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বাজেভাবে হারার পর কেউ ভাবেনি সেমিফাইনালে লড়াইয়ে শক্তিশালী দলগুলোকে টেক্কা দিবে আফগানিস্তান। সর্বশেষ বিশ্বকাপ মৌসুমেও একটি ম্যাচেও জিততে পারেনি আফগানিস্তান দলটি। কিন্তু ভারত বিশ্বকাপে সকল আলোচনা সমালোচনাকে ছাপিয়ে সাত ম্যাচে চার জয় এবং তিন হার নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানটি আফগানদের দখলে!

বিশ্বকাপের আগে আফগানিস্তান অংশগ্রহণ করেছিল এশিয়া কাপের লড়াইয়ে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলংকা এবং নেপালকে নিয়ে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টটিতে আফগানদের পারফরম্যান্স ছিলো তলানির দিকে। বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছিল আফগানিস্তান। এশিয়া কাপে এমন বাজে পারফরমেন্সের পর কেউ ই ভাবেনি আফগানিস্তান ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভালো কিছু করে দেখাবে। কিন্তু আফগানরা পুরোপুরি চমক দেখিয়েছে ভারত বিশ্বাকাপে। এশিয়া কাপে ভালো পারফরম্যান্স করা শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশকে ছাপিয়ে তারা এখন সেমিফাইনালের দাবিদার।

আমরা আমরা তাদের বিশ্বকাপের শুরুটা করে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ভালো শুরু পেয়েছিলাম আফগানিস্তান। দুই উইকেট হারিয়ে তুলে নিয়েছিলো শতরান। তারপরেই শুরু হয় দলটির ব্যাটিং বিপর্যয়। একের পর এক উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৫৬ রানেই অল-আউট হয়ে যায় দলটি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ছোট টার্গেট সহজেই চেজ করে ফেলে। ফলে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬ উইকেট এর ব্যবধানে হেরে বিশ্বকাপ মিশন শুরু হয় আফগানিস্তান দলের।

নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তান মুখোমুখি হয় স্বাগতিক ভারতের। এই ম্যাচে আফগানিস্তান প্রথমে ব্যাটিং করে তুলনামূলক ভালো একটি টার্গেট দাড় করায়। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিলো ভারতের মতো দলের বিপক্ষে জয়ের জন্য। ফলস্বরূপ মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান চেজ করে ম্যাচে জয় পায় ভারত দল। নিজেদের বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচের দুইটিতেই হারে আফগানরা।

নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আফগানিস্তান মুখোমুখি হয়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সর্বশেষ মৌসুমে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রেকর্ড পরিমান রানের ব্যবধানে হেরেছিলো আফগানিস্তান দল। প্রথম দুই ম্যাচ হারার পর তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে ভালো পারফরম্যান্স করা মোটেও সহজ ছিলোনা আফগানিস্তানের জন্য। তবে তারা সফল হিসাব নিকাশ কে পিছনে ফেলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৯ রানের জয় পায়। আফগানিস্তানের দেওয়া ২৮৪ রানে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২১৫ রানেই অল-আউট হয় ইংল্যান্ড দল।

নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে আফগানিস্তান মুখোমুখি হয় পাকিস্তানের বিপক্ষে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ের পর পাকিস্তানের বিপক্ষেও আত্মবিশ্বাসী ছিল আফগানরা। যার ফলস্বরূপ প্রথমবারের মতো পাকিস্তান দলকেও আর উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের ২য় জয় পায় আফগানিস্তান। পাকিস্তানের বেধে দেওয়া ২৮২ রান মাত্র দুই উইকেট হারিয়েই চেজ করে আফগানিস্তান।

ইংল্যান্ড এবং পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে জয়ের পর আফগানিস্তান মুখোমুখি হয় তুলনামূলক সহজ কর্তৃপক্ষ শ্রীলংকা এবং নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে। এই দুই ম্যাচেও এক অপ্রতিরোধ্য আফগানিস্তানকে দেখতে পায় ক্রিকেট বিশ্বকাপ। শ্রীলঙ্কাকে ছয় উইকেট এর ব্যবধানে হারানোর পর নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে গতকাল দলটি জয় পেয়েছে উইকেট এর ব্যবধানে ; যা সত্যিই অবিশ্বাস। চার জয়ে আট পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হবার লড়াইয়ে দলটি এখন টেক্কা দিচ্ছে নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার মত শক্তিশালী দলগুলোর সাথে।

আফগানিস্তান কি পারবে সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়ে রেকর্ড করতে। শেষ দুই ম্যাচে আফগানিস্তান মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা বিপক্ষে। পারফরম্যান্স এবং দলগতমান বিবেচনায় অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো অনেকটাই অসম্ভব হবে দলটির জন্য। তবে এই আফগানিস্তান দলটি ইংল্যান্ড পাকিস্তানের মতো শিরোপা প্রত্যাশীদের হারিয়ে সেমিফাইনালের লড়াইয়ে টিকে আছে। তাই যেকোন কিছুই সম্ভব! তবে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে হারটা আফসোসের কারন হবে আফগানিস্তানের জন্য!

ACB



0
0
0.000
0 comments