ওয়ানডেতে অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ 🇧🇩
Pixabay
ওয়ানডে ক্রিকেট আর বাংলাদেশ, এ যেন এক ভাঙ্গনহীন সম্পর্ক। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অন্য কোন ফরমেটে পারুক আর নাই বা পারুক, ওডিয়াইতে তারাই রাজা। যখনই ওডিয়াই প্রসঙ্গ আসে, তখন বাংলাদেশ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। বিশ্বের বাঘা বাঘা দলও বাংলাদেশ সমতুল্য করতে বাধ্য।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ওয়েস্ট-ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ খেলছে ওয়েস্ট-ইন্ডিজের মাটিতে। দ্বীপ রাষ্ট্র ওয়েস্ট-ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ সিরিজগুলোতে বাংলাদেশ ছিলো অপ্রতিরোধ্য। দেশ এবং বিদেশ উভয় জায়গাতেই তাদের সাফল্য শতভাগ। তাই এই সিরিজেও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কাছ থেকে ভালা কিছু আশা করছিলো ভক্ত সমর্থকরা।
সিরিজের শুরুতে বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট-ইন্ডিজের মধ্যে দুটি টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দুটি টেস্ট ম্যাচেই বাজেভাবে হারে বাংলাদেশ। ব্যাটিং বোলিং এবং ফিল্ডিং তিন জায়গাতেই ব্যর্থ বাংলাদেশের খেলোয়ারেরা। এক সাকিব আল হাসান বাদে সবাই ছিলো অফ-ফর্মে। এমন বাযে পারফরম্যান্সের পর ইনিংস বাবধানে যে হারেনি সেটাই বাংলাদেশ জন্য বড়ো বিষয়৷ বরাবরের মতোই টেস্টে বেহাল দশা বাংলাদেশ দলের।
টেস্টর পর টি-টুয়েন্টিতেও পুরোপুরি ব্যর্থ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ টি-টুয়েন্টি দল। বিরূপ আবহাওয়া কারনে প্রথম ম্যাচে হার এরাতে পারলেও পরের দুই-t20 তে সেই বেহাল দশা৷ হার্ড হিটার ব্যাটারের অভাব ভুগিয়েছে পুরো সিরিজ জুড়েই।
টেস্টে এবং টি-টুয়েন্টিতে ভরাডুবি হলেও একদিনের ক্রিকেটে পুরোপুরি ভিন্ন এক দল বাংলাদেশ। প্রিয় এই ফরমেটে মনেই হয়নি তারা আগের দুই টেস্ট এবং টি-টুয়েন্টি সিরিজে হেরেছে। ব্যাটিং, বোলিং এমনকি ফিল্ডিং দেখা গেছে আমূল পরিবর্তন। বিশেষ করে আগুনঝরা বোলিংয়ে নাস্তানাবুদ করেছে প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইন-আপকে৷ তিন ম্যাচের ওডিয়াই সিরিজের প্রথম দুটিতেই বিশাল ব্যাবধানে জিতেছে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ওডিয়াই দল। এতে করে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় করে নিলো বাংলাদেশ।
প্রথম ওডিয়াইতে বাংলাদেশকে নিয়ে কিছুটা শঙ্কা ছিলো। এমন হারের পর কাম-ব্যাক করাটা ছিলো কঠিন ব্যাপার। তবে ক্যাপ্টেন আর ফরমেট বদলে, বদলে গেছে বাংলাদেশ দলের ভাগ্যের চাকাও। এটাকে শুধু ভাগ্য বললেও ভুল হবে, কেননা প্রথম ম্যাচটি জয়ের পিছনে ছিলো দলগত পারফরম্যান্সের অবদান। প্রথম ম্যাচটিতে সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে ছিলো বদ্ধ-পরিকর। যার ফলে ওয়েস্ট-ইন্ডিজকে বোলিংয়ে ১৫০ রানের মাথায় আটকে দেওয়া থেকে শুরু করে ৬ উইকেটের জয় পায় তারা।
ICC
দ্বিতীয় ওডিয়াইতেও প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্সকে ধরে রাখে ক্রিকেটাররা। এদিক ওয়েস্ট-ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন-আপ ধসিয়ে দেয় স্পিনাররা। মিরাজ আর নাসুমের অসাধারণ পারফম্যান্সে ১০৮ রানেই অল-আউট হয় স্বাগতিকরা। ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু এনে দেয় দুই ওপেনার নাজমুল হাসান শান্ত আর কাপ্টেন তামিম ইকবাল। পঞ্চাশের আগে শান্তর বিদায়ে ওপেনিং জুটি ভাঙলেও লিটনকে সাথে নিয়ে ম্যাজ শেষ করে আসেন তামিম৷ পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের আরেকটি অর্ধশতক। বাংলাদেশ দল জয় পায় ৯ উইকেটের ব্যাবধানে।
এই জয়ের ফলে ওয়েস্ট-ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা ১০ টি ওডিয়াই ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। তাছাড়া এই ম্যাচ জয়ের মাধ্যমে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় করে নিয়েছে টাইগাররা। আশা করি সামনের দিনগুলোতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ আর টি টুয়েন্টি সিরিজ দেখে যখন মন বিষন্ন আর হতাশ হয়ে পড়ে,তখন ওয়ানডের পারফরম্যান্স দেখে মনে আবার আশার আলো ফিরে আসে,মনে হয় না অন্তত একটা ফরমেটেতো দল ভালো খেলছে নিয়মিত, এটাই স্বান্তনা।
হা! বাংলাদেশ শুধু ওডিয়াই খেললেই ভালো হতো। সমর্থকদের হতাশ হওয়া লাগতোনা 😃